ফেব্রুয়ারি মাসেই ছাত্রদের নতুন দল ঘোষণা করা হবে

সারজিস আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। দেশের প্রয়োজনে নতুন দল গঠন করতে গিয়ে আমরা নাহিদ ইসলামকে এ দলের দায়িত্ব নিয়ে জনগণের কাতারে এসে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছি।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেই দেশে ছাত্রদের নতুন দল ঘোষণা করা হবে। ফ্যাসিস্টবিরোধী ছাত্রদের যে নতুন রাজনৈতিক দল হবে, সে দল সব শ্রেণী-পেশার মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে কেউ এ দলের নাম ব্যবহার করে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে না।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি রিসোর্টে জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ক্যাম্পেইনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। দেশের প্রয়োজনে নতুন দল গঠন করতে গিয়ে আমরা নাহিদ ইসলামকে এ দলের দায়িত্ব নিয়ে জনগণের কাতারে এসে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছি।
তিনি বলেন, আমাদের দলে পদ নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো বিভাজন নেই। কিছু মিডিয়া দলের পদ-পদবী নিয়ে নানা কথা লিখছেন। তবে আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। তবে দেশের স্বার্থে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, এখনো আছি।
সারজিস আলম রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করার চেষ্টা করলে দেশে আরেকটা গণবিপ্লব হবে। আগামী নির্বাচন হবে গনঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে সামনে নিয়ে। এ নির্বাচনে কোনো দল যদি তিনশ আসনেই জয়ী হয় তবে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। আমরা সেটি মেনে নেব।
তিনি আরো বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কারণে খুনি হাসিনা লেজ গুটিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। পালানোর আগে সে তার পরিবারের সদস্যদের আগেই পালানোর সুযোগ করে দিয়েছে। কিন্তু দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের খবর নেয়নি। ক্ষমতায় থাকতে খুনি হাসিনা যুবলীগ, ছাত্রলীগকে টিস্যূ হিসেবে ব্যবহার করেছে। এখন খুনি হাসিনা ও তার দোসররা বিদেশের মাটিতে বসে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য উসকানি দিচ্ছে। সে উসকানিতে যারা দেশের ভেতরে বসে কিছু করার চেষ্টা করবেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের গ্রেফতার হয়ে জেলে থাকতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সারজিস আলম ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের কাছে খবর আসছে, থানা পুলিশ ও কোর্টের অনেক বিচারক টাকার বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে যুক্তদের সুযোগ দিচ্ছেন। অনেক রাজনৈতিক দলের নেতা ফ্যাসিবাদের দোসদের কাছ থেকে নানা কিছুর বিনিময়ে শেল্টার দিচ্ছেন। দয়া করে এ কাজটি করবেন না। তাহলে আপনাদের পরিণতি একদিন শেখ হাসিনার মতো হবে। এ কারণে আমাদের গনঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের কথা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি তবে আমাদের কোনো দেশী-বিদেশী শক্তির শেল্টারের প্রয়োজন হবে না। খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে যখন আন্দোলন করছিলাম তখন আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। তাই আমাদের কোনো শেল্টারের প্রয়োজন হয়নি।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আন্দোলনে নিহত মেহেদী হাসানের বাবা সানাউল্লাহ, নিহত ইমাম হোসেনর মা কোহিনুর ইসলাম, আহত শাকিল আহমেদ, নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা তহিন মাহমুদ, সোনারগাঁয়ের সংগঠক শাকিল সাইফুল্লাহসহ অনেকে।