অপরাধ

ঢাবিতে তোফাজ্জল হত্যা: অধিকতর তদন্তের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় অধিকতর তদন্ত করবে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা নারাজি আবেদন মঞ্জুর করে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামান এই নির্দেশ দেন।

আদালতে শাহবাগ থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা জিন্নাত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আদালত আদেশে বলেছেন, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তা এই অধিকতর তদন্ত করবেন।

তোফাজ্জল হত্যা মামলার বাদী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ ২ ফেব্রুয়ারি এই মামলার অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে আদেশের জন্য গতকাল তারিখ ধার্য করেছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে অ্যাডভোকেট সেলিম জাবেদ নারাজি আবেদনে বলেন, মামলার তদন্ত সুষ্ঠু হয়নি। এই মামলায় ছয় আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের জবানবন্দি অনুযায়ী সুলতান আহমেদ রকিসহ আরও আটজন এই ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা তাঁদের বাদ দিয়েছেন। তাঁদের বাদ দেওয়া হলে মামলার ক্ষতি হবে। এ কারণে অভিযোগের আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

এই মামলার আরেক বাদী তোফাজ্জলের ফুফাতো বোন মোসা. আসমা আক্তার আদালতে মামলার বিচারকাজ শুরুর আবেদন করেছিলেন।

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে তোফাজ্জলকে দুই দফায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মাঝখানে তাকে ক্যানটিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়। হত্যার ঘটনায় পরদিন শাহবাগ থানায় মামলা করেন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। ২৫ সেপ্টেম্বর ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ মাসুমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন আসমা আক্তার। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা মামলার সঙ্গে এই মামলা একই সঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেন।

তদন্ত শেষে ২১ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করে ৩০ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান।

অভিযোগপত্রভুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মো. জালাল মিয়া, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের সুমন মিয়া, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন, ভূগোল বিভাগের আল হোসেন সাজ্জাদ, আবাসিক ছাত্র আহসান উল্লাহ, ওয়াজিবুল আলম, ফিরোজ কবির, আব্দুস সামাদ, শাকিব রায়হান, ইয়াসিন আলী, ইয়ামুজ্জামান ইয়াম, ফজলে রাব্বি, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান, রাতুল হাসান, সুলতান মিয়া, নাসির উদ্দিন, মোবাশ্বের বিল্লাহ, শিশির আহমেদ, মহসিন উদ্দিন ও আব্দুল্লাহহিল ক্বাফি। তাঁদের মধ্যে প্রথম ছয়জন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button